ডাকসু নির্বাচনের ৬ জিএস প্রার্থীকে নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:০৯ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী ছয়জন প্রার্থীকে নিয়ে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

বিতর্কে অংশগ্রহণ করা ৬ জিএস প্রার্থী হলেন: ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের শেখ তানভীর বারী হামিম, শিবির সমর্থিত প্যানেলের এস এম ফরহাদ, উমামা ফাতেমার প্যানেলের আল সাদী ভূঁইয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত প্যানেলের খায়রুল আহসান মারজান, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেলের আবু বাকের মজুমদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশিকুর রহমান।

চারটি ধাপের মধ্যে দিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। প্রথম ধাপে সব প্রার্থী তারা নির্বাচিত হলে কী করবেন?, দ্বিতীয় ধাপে দুইটি প্রশ্নের উত্তর, তৃতীয় পর্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং সবশেষে ছিল কনক্লুশন (উপসংহার)।

নির্বাচিত হলে কী করবেন প্রার্থীরা? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রার্থীরা বলেন—

শেখ তানভীর বারী হামিম: নিজেকে ভোট দেওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার লিটারেসি, পাঠদান পদ্ধতি আধুনিকায়ন ও আবাসন সঙ্কট সমাধানের বিষয় উল্লেখ করেন।

খায়রুল আহসান মারজান: নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীরা কী চায় সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব। মান্ধাতার আমলের পদ্ধতি বাদ দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে সকল কাজ করার ব্যবস্থা করে দেব। সবাইকে তার দায়িত্ব পালনে বাধ্য করব। বাজেট কেউ চুরি করতে পারবে না। নারীদের হলগুলোতে অনাবাসিক ছাত্রীদের জন্য কমনরুমের ব্যবস্থা করব।

এস এম ফরহাদ: পূর্বের কাজ দ্বারা আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে, কেমন করে আমরা ১২ মাসে ৩৬টি সমস্যা সমাধান করব তা আমরা এর আগে আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে দেখিয়েছি। অ্যালামনাইদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং করে শিক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা, আবাসন ও খাবারের মান নিয়ে কাজ করব।

আবু বাকের মজুমদার: নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, গবেষণামুখী করার জন্য স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, ফান্ড ভিত্তিক পিএইচডি চালু, ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান বেড, চেইন ফুড ম্যানেজমেন্ট, বাস সংখ্যা বৃদ্ধি ও ডিজিটালাইজেশন এবং ওয়ান আইডি ওয়ান সল্যুশেন নিয়ে কাজ করব।

আল সাদী ভূঁইয়া: কথা নয়, কাজে বড় হব। ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি কেউ কায়েম করতে পারবে না। অ্যাকাডেমিক ক্যাম্পাস, ক্যারিয়ার নিয়ে প্ল্যান ও ফান্ড, স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন ও বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজেশন করব।

মো: আশিকুর রহমান: শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করব, বিশেষ করে অ্যাটেনডেন্সের বিষয়টিই হলো আমার ইশতেহার। ঢাবিকে ঢাবি হিসেবেই রাখব, অক্সফোর্ড বানাতে হবে না। নির্বাচিত হলেই ইচ্ছেমতো আমাকে গালি দিতে পারবেন, অন্যদের মতো আপনাদের বট বাহিনী বা ফুড পান্ডা আক্রমণ করবে না।

প্রার্থীরা আরও বলেন—

সাদী: নির্বাহী প্রধান হলে অন্যমতের কাউকে তাদের কাজ থেকে বিরত রাখা হবে না, বরং সবাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাগুলো সুরক্ষিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট নিয়ে কাউকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।

বাকের: এর আগেও সবাইকে নিয়ে কাজ করেছি, তাই এখনও সমস্যা সমাধানে সক্ষম হব। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানো হবে, যেমনটা আগেও করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদন জানাই যেন তারা পূর্ববর্তী নেতৃত্বের কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে আমাকে নির্বাচিত করেন।

ফরহাদ: ভিন্নমতকে সম্মান দিয়ে বড় হয়েছি এবং আমাদের প্যানেলেও এই নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে আমার কোনো সমস্যা হবে না। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের জন্য ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগের করা যেতে পারে। সব সময় খোলা বা বন্ধ রাখা কোনো কার্যকর সমাধান নয়, বরং কিছু নির্দিষ্ট সময়ে লোক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

মারজান: আমার একটি সংগঠন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন মতের মানুষকে নিয়ে কাজ করতে পারি। সবার মতামত নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত পাহারা, মাদকাসক্তদের বহিষ্কার এবং অ্যালামনাইদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশাধিকারের দেওয়া যেতে পারে।

হামিম: আমি নির্বাহী প্রধান হলে ভিন্নমতের সঙ্গে কাজ করার জন্য ‘রিট’ করার বিষয়ে ভাবছি। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন— এই তিনটি জোনে ভাগ করা যেতে পারে।

আশিক: ট্যাগিং এবং বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমার মতে, ফৌজদারি মামলা ছাড়া সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই। বহিরাগত সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান করা হবে, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য বাড়ানো হবে এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আমি কোনো লিফলেট ছাপাইনি বা কাউকে খাওয়ানোর মাধ্যমে ভোট চাইনি।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর