সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে ১৪ তরুণ-তরুণীর যৌতুক বিহীন বিয়ে

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৪ এএম

সামাজিক সচেতনতার বৃদ্ধির লক্ষে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৪ তরুণ-তরুণীর যৌতুক বিহীন বিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে।

শুক্রবার সিলেটে কোম্পানীগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের আয়োজনে উপজেলার সাদাপাথর রিসোর্টে এ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ অনুষ্ঠানে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও আজিজুন্নাহারের বিরুদ্ধে। তার বাঁধায় অডিটোরিয়ামে করতে দেওয়া হয়নি এ অনুষ্ঠান। এমন অসহযোগিতায় উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসীদের সংগঠন ‘কোম্পানীগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকে’ প্রতিবছর উপজেলার মানুষদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা কার্যক্র চালিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে এ বছর তারা যৌতুক বিহীন গণবিবাহের আয়োজন করে। এ বিয়েতে তারা বর ও কনের পোশাকের পাশাপাশি সংসারের প্রয়োজনীয় রান্নার সরঞ্জাম, লেপ-তোশক এবং কর্মসংস্থানের জন্য একটি করে সেলাই মেশিন দেন আয়োজনরা। এছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠানের রীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের খাওয়া-ধাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।

সামাজিক ব্যাধি যৌতুক এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এ আয়োজন বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের সহ-সভাপতি জহুরুল হক আহাদ।

এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারের বিরুদ্ধে যৌতুক বিহীন গণবিবাহ ও সামাজিক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। অনুষ্ঠানটি উপজেলা অডিটোরিয়ামে হওয়ার কথা ছিল। ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে অডিটোরিয়াম পেয়ে ব্যানার ও চিঠি ইস্যু করেন আয়োজকরা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার সম্মতি দিয়েছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা-উন নবী। কোম্পানীগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কো-অর্ডিনেটর ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বিভাগীয় কমিশনারের শিডিউল নিয়েছিলেন।

তিনি জানান এ অনুষ্ঠানটি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অডিটোরিয়ামে হওয়ার জন্য অনুমতি দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেখানে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী প্রধান অতিথি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকার জন্য সম্মতি দেন৷ অনুষ্ঠানের আগেরদিন বিকেলে পুনরায় আবেদনের জন্য বলেন। পুনরায় লিখিত দিলেও হঠাৎ করে রাতে অজুহাত দেখিয়ে উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে সাদাপাথর হোটেল এন্ড রিসোর্টে এ অনুষ্ঠান করা হয়।

এ বিষয়ে প্রবাসীরা সেখানে মানববন্ধনের পাশাপাশি লন্ডনসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আমিনুর রশীদ।

তিনি আরো বলেন, এটাতো কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম না, দেশ বিরোধী প্রোগ্রামও না। তবুও কেন প্রশাসন এমন করলো জানা নেই। আমরা সামাজিক উন্নয়নবিরোধী এই ইউএনওকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার চাই। পাশাপাশি তাকে উপজেলাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, আমি তাদের কোনো আশ্বাস দেইনি। বলেছিলাম দরখাস্ত দেওয়ার জন্য। তাদের দরখাস্তটা আমি পেয়েছি বৃহস্পতিবার। দরখাস্ত পাওয়ার সাথে সাথেই না করে দিয়েছি। এখানে যেহেতু বয়সের একটা বিষয় আছে, কে অভিভাবক, কাদের বিয়ে হচ্ছে, এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া সরকারি অডিটোরিয়াম, সরকারি প্রোগ্রামের জন্যই তাই তাদের না করা হয়েছে। এটাতে অন্য কোনো কিছু বিবেচনা না করাটাই শ্রেয়।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর