ঢাবি ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থী হেনস্তার ঘটনা
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক: শিবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের এক কর্মচারী কর্তৃক পোশাক নিয়ে হেনস্তার ঘটনায় ঢাবির শিবির সভাপতি শাহবাগ থানায় গিয়েছিলেন হেনস্তাকারীকে মুক্ত করতে- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাবি শিবির।
সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের ওই বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে প্রতিবাদ জানায় ঢাবি শাখার শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খাঁন।
এর আগে সোমবার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এক কর্মসূচিতে 'একজন ধর্ষক বা নারী নিপীড়নকারীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি’ বলে বক্তব্য দেন।
বিবৃতিতে ঢাবি শিবিরের নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রদল সেক্রেটারির এ বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার। দেশব্যাপী ছাত্রকল্যাণমূলক কাজের জন্য শিক্ষার্থী সমাজের কাছে ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মূলত ঘটনার সময়ে শাহবাগ থানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের আহ্বানে শাহবাগ থানায় সৃষ্ট পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং সেখানে অবস্থানরত 'সংক্ষুব্ধ জনতা'র দাবি ও অবস্থান জানার জন্য শাহবাগ থানায় যায়। তিনি সেখানে কাউকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে তদবির করেননি। বরং তিনি সেখানে উপস্থিত মবকে 'অভিযুক্ত অর্ণবকে কোর্টে তোলা যাবে না, এখানেই মুক্তি দিতে হবে' এই দাবি থেকে সরিয়ে এনে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বোঝাতে সক্ষম হোন।
বিবৃতিতে শিবির নেতারা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে ছাত্রদল নেতার মন্তব্য এবং শিবির সভাপতির ভূমিকা নিয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সেদিন রাতে ওই আসামিকে ছাড়াতে ‘তৌহিদি জনতার’ একটি দল ঘেরাও করেছিল। তারা চাচ্ছিল আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে। তখন আমি বিপজ্জনক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ও তাদের সাথে কথা বলার জন্য ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রনেতা এবং সাংবাদিককে আহ্বান করি। সকালে শিবির সভাপতিসহ অনেকে ছাত্রনেতা প্রশাসনকে সাহায্য করতে আসে। তাদের সহযোগিতায় আমরা আসামিকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কোর্টে চালান করতে সফল হই৷
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, সেদিন শাহবাগ থানায় তৌহিদি জনতা নামে একদল মানুষ মব তৈরি করে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে আনতে যায়। তখন আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য বুঝাতে থানায় গিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, সেসময় ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদও ভোর পাঁচটার দিকে থানায় এসেছিলেন। তিনিও একইভাবে উপস্থিত মবকে বুঝিয়েছেন এবং আইনি প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রদল বলছে, আমরা নাকি সেখানে আসামিকে ছাড়িয়ে আনার জন্য গিয়েছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে তারা এমন মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: