ছাত্রশিবির সভাপতি

যারা পাথর মেরে মানুষ হত্যা করে, আমরা সবসময় তাদের বিরুদ্ধে

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:১২ পিএম

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু যারা সন্ত্রাস করে, পাথর মেরে মানুষ হত্যা করে, মনোনয়ন না পেয়ে নিজেদের কর্মীকে হত্যা করে, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-লুটপাট করে, আমরা সবসময় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। ফটিকছড়িতে আমাদের বহু ভাই রক্ত দিয়েছেন, আমরা তা ভুলিনি।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও ভূজপুর উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে ছাত্র ও যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, একসময় ধানভরা গোলা আর পুকুরভরা মাছ ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু শেখ মুজিবের জুলুমতন্ত্র ও লুটপালতন্ত্রের কারণে দেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিলেও প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। শেখ হাসিনার আমলে সেনা অফিসার, আলেম-ওলামাসহ বহু মানুষ হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, বারবার বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকেই দেশি-বিদেশি শক্তি এদেশকে গোলামির শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখার ষড়যন্ত্র করে এসেছে।

বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব (অব) গোলাম হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তরের সভাপতি তানজির হোসেন জুয়েল, দক্ষিণের সভাপতি মাইনুল ইসলাম মামুন, চবি শাখা শিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলি। উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি শওকত আলী, উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার।

ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তরুণ সমাজকে সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার কাজ করছে উল্লেখ করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন ও ঐতিহাসিক পর্বে ছাত্রশিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল ইনসাফ, মানবিকতা ও সাম্য প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতার পর তা হয়নি। শেখ মুজিব গণতন্ত্রের কথা বললেও পরে বাকশাল কায়েম করেন, রক্ষীবাহিনী দিয়ে বিরোধীদের দমন করেন।

২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অত্যাচারের ধারাবাহিকতা ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। আবাবিলের ঝাঁকের মতো আমাদের ভাই-বোনেরা রাস্তায় নেমে জীবন দিয়েছিলেন। তাদের ত্যাগেই ৫ আগস্ট, ৩৬শে জুলাই বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছে।

তরুণ প্রজন্মের আচরণগত উন্নতির ওপর তিনি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ছাত্রদের সবক্ষেত্রে ভালো হতে হবে। প্রতিবেশীর কাছে ভালো প্রতিবেশী হতে হবে, আত্মীয়স্বজনের কাছে ভালো হতে হবে। সমাজের কিছু কুলাঙ্গার নেতৃত্ব এবং পার্শ্ববর্তী দেশের আধিপত্যবাদী শক্তি মিলে বাংলাদেশের যুব সমাজকে মাদক দিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। সীমান্ত এলাকায় মাদকের কারখানা বসানো হয়েছে—যুব সমাজকে দ্রুত মাদকাসক্ত করতে।

সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, নির্বাচিত হলে ফটিকছড়িতে ১৭টি অগ্রাধিকারমূলক কাজ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে—ফটিকছড়ি ও ভূজপুরে দুটি আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, উত্তর–দক্ষিণে দুটি ফায়ার স্টেশন স্থাপন, নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, শিক্ষা উন্নয়ন, প্রায় এক হাজার কিলোমিটার সড়ক–সেতু উন্নয়ন, নতুন পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও গ্যাস সরবরাহ সম্প্রসারণ। এ ছাড়া ২১টি বাজার আধুনিকায়ন, প্রবাসী সেবা কেন্দ্র, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি, শিল্পাঞ্চল স্থাপন, পর্যটন উন্নয়ন, চা–বাগান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও কৃষিপণ্যের কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে বহু প্রতীক্ষিত নির্বাচন সামনে এসেছে। দেশের প্রবাসী ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাই। ২০০৮ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর