হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৯ পিএম

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কামাল রঞ্জিত মার্কেটে জড়ো হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, “কথায় কথায় হল ছাড়, হল কি তোর বাপ-দাদার।”

গতকাল বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় প্রোক্টরিয়াল বডির জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানান তারা।

পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে বহিরাগতদের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। হল কারো বাবার সম্পত্তি নয় যে বলবে ছেড়ে দিতে হবে। জীবন যাবে, তবুও হল ছাড়ব না।”

কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী আহাদ বলেন, “আমরা যৌক্তিক বিষয়ে আন্দোলন করছি। অথচ শিক্ষকরা বহিরাগতদের এনে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছে। যতক্ষণ না দাবি মানা হচ্ছে, আমরা হল ছাড়ব না।”

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এর আগে গত বছর জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে এমন রাতের নোটিশে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবারও।

তাদের দাবি, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নব্য স্বৈরাচারদের আবির্ভাব ঘটেছে বলেই রাতারাতি হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কিছু ছাত্রী ও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, ছাত্রীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

এর আগে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান একদল ব্যক্তি। রাত পৌনে ৮টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি পূরণ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ দুই শতাধিক শিক্ষককে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে বেলা ১টা থেকে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছিলেন ওই শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি হাতে হামলা চালায় একদল ব্যক্তি। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তারা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের তালা খুলে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের বের করে দেয়। হামলাকারীদের পরিচয় জানা যায়নি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’র (বিএসসি ইন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এ সভায় কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর পাশাপাশি পশুপালন ও ভেটেরিনারি ডিগ্রিও চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মোট তিনটি ডিগ্রি চালু রাখার সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

পরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয় এবং শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর