ইবিতে ‘আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর’ নামে একটি হলের নামকরণের দাবি আহমাদুল্লাহর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত:
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৯ পিএম

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও প্রয়াত আলেম ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে ‘একাডেমিক বা আবাসিক হল’-এর নামকরণের দাবি জানিয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সিরাত বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) শায়খ আহমাদুল্লাহর ভ্যারিফাইড পেইজে এক আবেগঘন স্টাটাসের মাধ্যমে এ দাবি জানান তিনি। গতকাল (বুধবার) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাতুন নবি (সা.) উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসুল্লাহ (সা.) শীর্ষক’ আলোচনা সভায় সিরাত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় শায়খ আহমাদুল্লাহ মহানবী (সাঃ)-এর জীবন, আদর্শ এবং শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেন।
আহমাদুল্লাহ তাঁর স্টাটাসে উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সিরাত সম্মেলনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করলেও একটি শূন্যতা হৃদয় থেকে অনুভব করেছি।সেটা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়টির বরেণ্য প্রফেসর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহর নামে একটি অ্যাকাডেমিক কিংবা আবাসিক হল না থাকার শূন্যতা।
আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করে তিনি উল্লেখ করেন, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার ছিলেন দেশের সম্পদ এবং জাতির জন্য আল্লাহর এক নেয়ামত। তিনি শুধু প্রাজ্ঞ আলেমই ছিলেন না, তিনি ছিলেন দরদী সমাজ সংস্কারক। বক্তৃতা ও রচনার মাধ্যমে জীবনভর তিনি শিরক, বিদআত, খ্রিষ্টান মিশনারী অপতৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করেছেন। তার এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অসংখ্য মানুষ সঠিক পথের দীশা পেয়েছে। আবার শতধা বিভক্ত জাতিকে তিনি যেভাবে ঐক্যের পথ দেখিয়েছেন, সেটাও এই দেশের প্রেক্ষিতে বিরল। তিনি আমাদেরকে প্রান্তিকতা ছেড়ে মধ্যমপন্থা শিখিয়েছেন। চিন্তার ভিন্নতা সত্ত্বেও ঈমানের অভিন্নতায় সকল মানুষকে কীভাবে কাছে টানতে হয়, শিখিয়েছেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মতো আরো অনেক গবেষক নিশ্চয় আছেন, কিন্তু তার মতো এতটা জনবান্ধব, গণমুখী এবং সর্বশ্রেণির কাছে সমাদৃত লেখক-গবেষক খুব কমই আছেন। আবার কর্মের গুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন, তিনি তাদের শীর্ষে।
তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয়, ইসলামিক সাবজেক্টের শিক্ষক হিসেবে ইসলামকে তিনি শুধু ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয়ে ইসলামের বার্তা নিয়ে তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন, ইসলামকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। অন্য কোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রে এমন নজির বিরল। এর মাধ্যমে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কেও দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত করেছেন। ফলে সর্বজনশ্রদ্ধেয় বরেণ্য এই আলেমের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল থাকা যুক্তি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দাবি।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করছেন বলে উল্লেখ করেন, প্রোগ্রাম শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে খেতে এই কথাগুলোই তাদেরকে বলেছিলাম।মৌলিক গবেষণা কর্মের মাধ্যমে স্যার যে হীরকতুল্য রচনাভাণ্ডার রেখে গেছেন, বিশ্বাস করি, সেগুলোই তাকে অমর করে রাখবে।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, তারপরও স্যারের নামে যদি কোনো একটি হলের নামকরণ করা হয়, তবে এর মাধ্যমে তার অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হবে। পাশপাশি নবীন শিক্ষার্থীরাও স্যারের কল্যাণমূলক চিন্তার সাথে পরিচিত হতে উদ্বুদ্ধ হবে। তাই, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের উদাত্ত আহ্বান—ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটি হলের নামকরণ করা হোক।
LIMON
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: