জাপা ভাঙতে তৎপর অন্তর্বর্তী সরকার, অভিযোগ জি এম কাদেরের

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০৯ এএম

শেখ হাসিনা সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারও জাতীয় পার্টি (জাপা) ভাঙতে তৎপর বলে অভিযোগ তুলেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের সিনিয়র নেতাদের আলাদা হয়ে যাওয়াকে মঙ্গলজনক হিসেবেই দেখছেন তিনি। যদিও দলের নতুন অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভ্যন্তরীণ বিভেদের জন্য জিএম কাদেরের ভারতপন্থি রাজনীতি ও স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করছেন।

সিনিয়র নেতাদের আলাদা হয়ে যাওয়া নিয়ে জি এম কাদেরের ভাষ্য, এ ধরনের মানুষগুলো দূরে সরে যাওয়ায় জাতীয় পার্টি নিজের চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। এটি দলের জন্য বিরাট মঙ্গল এনে দিয়েছে।

তবে জাপা চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যকে ভর্ৎসনা করেছেন দলটির নতুন অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার ভাষ্য, সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে একটি দল করবেন, এমনটা কে বলতে পারে? এটি কিন্তু উনি আমাদের বলেছেন।

জাপা চেয়ারম্যানের ভারতপন্থি রাজনীতির সমালোচনা করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ভারত থেকে এসে উনাকে জোর করে আমরা বলিয়েছিলাম যে- আমি কোনো কথা বলতে পারবো না। আমার ভারতের অনুমতি লাগবে। যদিও জি এম কাদেরের দাবি, তিনি যৌক্তিক কাজ করেছেন। কিন্তু এটিকে অনেকের দ্বারা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

জি এম কাদেরের অভিযোগ, শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচন ঘনিয়ে এলে জাতীয় পার্টিকে ভাঙার খেলা খেলত। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও একই পথে হাঁটছে। তিনি বলেন, এবারও একই রকম পথ ছিল। যারা এমনটা করেছেন তারা আমাকে সরকারের পক্ষে কথা বলার জন্য, সরকারের সঙ্গে থাকার জন্য বলেছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার যা চায় সেখানে আমরা থাকব, এতে তারা আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেবেন এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। আমি কিন্তু এমন প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এখন যে একাংশের কথা বলা হচ্ছে, এটি কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার করেছে।

তবে রাজনীতির সাম্প্রতিক মেরুকরণে অস্তিত্ব সংকটের মুখে বিভেদ ভুলে কর্মীদের মধ্যে এক হওয়ার তাগিদ রয়েছে। যদিও এমনটা যে খুব সহজেই ঘটছে না, তা দুই মেরুর নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট। জাপা চেয়ারম্যানের ভাষ্য, জাঁদরেল নেতারা এখন আর জাঁদরেল নেই। সামনের দিকে জাতীয় পার্টিতে একটা নতুন ধরনের চেহারা চাই। যেমনটা আগেও বলেছি, এখন এই ঘরকে আমি নতুন করে বানাবো, ঘরে আর কোনো মেরামতকাজ করব না।

অন্যদিকে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের ভাষ্য, জি এম কাদের দলে থাকতে চাইলে আমাদের আপত্তি নেই। তিনি দলে থাকতে পারেন। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে নয়। কারণ, কাউন্সিল হয়ে গেছে। কাউন্সিল তাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিন্তু উনি যদি থাকতে চান, তাকে সম্মানের সঙ্গে আমরা রাখব।

আগামী নির্বাচনে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টির দুই অংশই। এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে কোন পক্ষ ডাক পায়, আর শেষ পর্যন্ত লাঙ্গল প্রতীক কার হাতে থাকে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর